নারায়ণগঞ্জে ০২ শিক্ষক দ্বারা ২০ ছাত্রী ধর্ষিত



নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে একটি বেসরকারি স্কুলে ব্ল্যাকমেইল করে ২০ জনেরও অধিক ছাত্রীকে ৪ বছর ধরে যৌন হয়রানিসহ ধর্ষণের অভিযোগে দুই শিক্ষককে গণধোলাই দিয়েছে এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি শান্ত করে। অভিযুক্ত শিক্ষকের মোবাইলফোন, ল্যাপটপ এবং ক্যামেরায় তল্লাশি করে ২০ জনেরও অধিক ছাত্রীর সঙ্গে ধারণকৃত আপত্তিকর চিত্র জব্দ করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া মাদ্রাসা রোড এলাকাস্থ অক্সফোর্ড স্কুলে। গ্রেপ্তারকৃত দুই শিক্ষক হলো- 

মাদারীপুর জেলা সদরের শিলখাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলাম সরকারের ছেলে সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলাম সরকার ওরফে আশরাফুল (৩০) এবং ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার বাকচর এলাকার মৃত শহিদুল্লাহ শেখের ছেলে অত্র স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক জুলফিকার ওরফে রফিকুল ইসলাম (৫৫)।
ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে শত শত এলাকাবাসী স্কুলের সামনে জড়ো হয়। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

এলাকাবাসী জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলাম গত ৮ বছর ধরে স্কুলটিতে অঙ্ক ও ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা করে আসছে। তার চাকরি জীবনে আরিফুল ইসলাম অসংখ্য ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে আপত্তিকর ছবি তুলে ধর্ষণ করে। ছাত্রীদের কোচিং পড়ানোর জন্য তার বাসা ছাড়াও স্কুলের পাশে বুকস গার্ডেন এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়।

তার স্ত্রী, সন্তান না থাকলেও ওই ফ্ল্যাটে তিনটি খাট ছিল বলে জানায় ওই ফ্ল্যাটের দারোয়ান। গত তিনদিন ধরে তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো এলাকায় প্রচার হতে থাকে। পরবর্তীতে গতকাল বেলা ১১টায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই স্কুলে গেলে আরিফুল ইসলাম তার মোবাইল ফোনে থাকা আপত্তিকর ছবিগুলো ডিলিট করে ফেলে। পরবর্তীতে এলাকাবাসী ওই মোবাইল ফোন উদ্ধার করে এলাকার একটি মোবাইল দোকানে সফটওয়্যারের মাধ্যমে ছবিগুলো উদ্ধার করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই স্কুলে হামলা চালায়। এ সময় শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গণধোলাই দেয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকার শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে সহযোগিতা করে আসছিল বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, তার মেয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়ার সময় ওই শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয়। ওই মেয়ে এখন ৯ম শ্রেণিতে পড়ছে। এখনো লম্পট ওই শিক্ষক থেকে রক্ষা পায়নি আমার সন্তান। কিন্তু ঘটনার এত বছর পেরিয়ে গেলেও আমার সন্তান আমাকে না বলায় আমি এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি। গত ২-৩ দিন পূর্বে এ ব্যাপারটি জানতে পেরে এলাকার যুব সমাজকে বলেছি।

র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে তার মোবাইলফোন থেকে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অনেক ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করেছি। তার মোবাইলে যে সমস্ত ডকুমেন্টস পাই তা অত্যন্ত ভয়ানক। তার মোবাইলফোন জব্দ করা হয়েছে। ২০ জনের অধিক ছাত্রীর সঙ্গে ওই শিক্ষক ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণ করেছে। যা প্রাথমিকভাবে ওই শিক্ষক আমাদের কছে স্বীকার করেছে।

No comments

Powered by Blogger.